ছবি : পার্স টুডে থেকে নেয়া
ইরান, ভেনেজুয়েলা, কিউবাসহ বিভিন্ন দেশের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়ে প্রস্তাব পাস জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে। সোমবার পরিষদের সদস্য দেশ গুলোর সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে এ নিন্দা প্রস্তাবটি পাস হয়। প্রস্তাবটির পক্ষে ২৮ ভোট এবং বিপক্ষে ১৪টি ভোট পড়ে। এছাড়া ভোটদানে বিরত ছিলো ৫টি দেশ।
প্রস্তাবটির খসড়ায় ভেনিজুয়েলা ও ফিলিস্তিনকে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের প্রতিনিধি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এমন খবর প্রকাশ করেছে ইরান ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা পার্স টুডে।
প্রস্তাটি পাসের পর পরিষদের সদস্য দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেন, ‘এটি এমন এক বিজয় যা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিস্তারের সুযোগ এনে দেয়ার পাশাপাশি অধিকাংশ দেশ মার্কিন অন্যায় নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।’
রাজনৈতিক, বাণিজ্য, নিরাপত্তা এমনকি মানবাধিকারসহ যে কোনো অজুহাতে মার্কিন সরকার বিরোধী বা প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। এর মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের অবৈধ স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে দেশটি। মার্কিন প্রশাসন মনে করে নিজের স্বার্থ আদায় এবং অন্য দেশকে নতজানু করতে একমাত্র কার্যকর পথ হলো অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে দেশটির উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েস মিচেল বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা আমেরিকার কৌশলগত হাতিয়া এবং বর্তমানে বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে মোট ৪১৯০টি নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে।’
এ বিষয়ে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আমেরিকার বর্তমান সরকার নিষেধাজ্ঞার অস্ত্র ব্যবহার করে শুধু যে অন্য দেশের বৈধ সরকারকে উৎখাত করার চেষ্টা করছে তাই নয় একইসঙ্গে অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে তাদেরকে নতজানু করার চেষ্টা করছে। এ ছাড়া বিশ্ব অর্থ বাজারে একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠাও আমেরিকার আরেকটি উদ্দেশ্য।
এ বছরের মে মাসে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের বিশেষ প্রতিবেদক আদ্রিস জাজায়েরি বলেন, ‘কিউবা, ভেনিজুয়েলা ও ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকা যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা মানবাধিকার পরিষদের নীতিমালা ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।’
প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্প কিউবার সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক ছিন্ন করে দেশটির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া শুরু করে। ওয়াশিংটন ২০১৭ সালে ভেনিজুয়েলার ১৫০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে দেশটির বামপন্থী সরকারকে অর্থনৈতিক চাপে ফেলার চেষ্টা করেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে ইরানের সাথে ৬ দেশের পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর দুই দফায় দেশটির বিরুদ্ধে তেলসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সম্প্রতি আরও নিষেধাজ্ঞা চাপানোর হুমকি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
বাংলা/এনএস